টাইমস অনলাইন নিউজ : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্বামীর প্ররোচণা ও ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে ১৫ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে হত্যা করেছে গর্ভধারিনী মা রোকসানা আক্তার। এ ঘটনায় পুলিশ মাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের অশ^দিয়া গ্রামে।
সুত্র: বাংলাদেশ টুডে কুমিল্লা প্রতিনিধি
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, কাশিনগর ইউনিয়নের বারৈয়া গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী আমান উল্যাহর মেয়ে রোকসানা আক্তারের সাথে গত কয়েক বছর পূর্বে বরিশাল থেকে আসা দিনমজুর ইবরাহিমের বিয়ে হয়। গত ১৫ মাস আগে তাদের ঘরে আরাফাত হোসেন নামে এক শিশুর জন্ম হয়। তারপর থেকে দিনমজুর ইবরাহিম তাঁর শ^শুড় এলাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি বরিশাল চলে যায়। গত রমজান মাসে দিনমজুর স্বামী ইবরাহিম স্ত্রী রোকসানাকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বরিশাল যেতে বলে। কিছুদিন পর সে টাকা নিয়ে বরিশাল যায়। টাকাগুলো শেষ হয়ে গেলে রোকসানাকে আবার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় স্বামী ইবরাহিম।
কয়েকমাস আগে রোকসানা স্বামীর সাথে যোগাযোগ করে নিজ ও সন্তানের জন্য টাকা চাইলে সে বলে ‘শিশু সন্তানসহ তুই মরে যেতে পারিস না? আমি কোথা থেকে টাকা দিব? আমি টাকা দিতে পারবো না’। এ অবস্থায় রোকসানা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। স্বামীর কথায় রাগ ও ক্ষোভে রোকসানা শিশু সন্তানকে দুইবার পানিতে ফেলে দিলে গ্রামবাসী দেখতে পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। রোকসানা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দিনমজুর বাবা তাকে চিকিৎসা করায়। কিন্তু রোকসানা পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠেনি।
প্রতিবেশী ফেরদৌসি বেগম জানান, রোকসানার স্বামী দীর্ঘদিন স্ত্রী ও সন্তানের খোঁজখবর না নেয়ায় সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। গ্রামের বিভিন্নভাবে বাড়িতে কাজ করে নিজের ও সন্তানের আহার জোগায়। দিন যতই যাচ্ছিল, ততই রোকসানা আরও মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে থাকে। এরমধ্যে স্বামীর পক্ষ থেকে কোন রকম সহযোগিতা না পেয়ে বরং উল্টো সন্তানকে হত্যা করে ফেলার জন্য সে প্ররোচণা দিতে থাকে। মঙ্গলবার সকাল থেকে রোকসানার শিশু সন্তান আরাফ হোসেন খাবারের জন্য কান্নাকাটি করতে থাকে সে দিকবেদিক ছুটাছুটি করে খাবার জোগাড় করতে না পেরে পাশ^বর্তী অশ^দিয়া গ্রামের একটি ডোবাতে আরাফাতকে ছুড়ে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা ডোবাতে শিশুর লাশ ভেসে উঠতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশের সুরতহাল শেষে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় শিশুটির মা রোকসানা আক্তারকেও পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।